বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় পানীয়ের তালিকায় নিঃসন্দেহে ওপরের দিকে থাকবে চায়ের নাম। চায়ের প্রেম এক সর্বজনীন বিষয়। চা পান কেবলই একটি অভ্যাস হলেও, এর রয়েছে বেশ কিছু স্বাস্থ্যগুণও। বিপরীতে ধূমপান অত্যন্ত ক্ষতিকারক। তবে অনেকে আছেন যারা চা-সিগারেট একসঙ্গে খান। হাতে জ্বলন্ত সিগারেট, সঙ্গে গরম চা-কে ‘ডেডলি কম্বো’ বলা হয়।
অ্যানালস অব ইন্টার্নাল মেডিসিন জার্নালে প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, যেসব ব্যক্তি নিয়মিত ধূমপান করেন এবং মদ্যপান করেন, তাদের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত গরম চা পান করাটা ইসোফেজিয়াল (খাদ্যনালি) টিউমারের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেগবেষণায় বলা হয়, যারা দিনে অন্তত এক গ্লাস অ্যালকোহলযুক্ত পানীয় পান করেন, এর পাশাপাশি দিনে অতিরিক্ত গরম চা পান করেন, তাদের খাদ্যনালি ক্যানসারের ঝুঁকি বেশি। ধূমপায়ীদের ক্ষেত্রেও দেখা যায়, প্রতিদিন অতিরিক্ত গরম চা পান করলে তাদেরও এই ক্যানসার হওয়ার ঝুঁকি থাকে।গবেষণাটির লেখক পিকিং ইউনিভার্সিটি হেলথ সায়েন্স সেন্টারের ড. জুন এলভি জানান, চায়ে থাকা ক্যাফিন পাকস্থলীতে পৌঁছে এক ধরনের পাচক রস তৈরিতে সাহায্য করে, যা খাবার হজম করতে সাহায্য করে। কিন্তু তার সঙ্গে সিগারেটের নিকোটিন মিশলে, মাথা ব্যথা বা আচ্ছন্ন ভাব তৈরি হতে পারে। এই ধরনের অভ্যাস অনেক সময়েই খাদ্যনালীর ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। এরই সঙ্গে বৃদ্ধি পায় ফুসফসের ক্যানসার এবং পাকস্থলীর আলসারের ঝুঁকি। তবে শুধু চা পান করা নিয়ে চিন্তিত হওয়ার কিছু নেই বলে আশ্বস্ত করেন তিনি।
এ গবেষণার জন্য ৩০-৭৯ বছর বয়সী সাড়ে চার লাখ ব্যক্তির ধূমপান, মদ্যপান ও চা পান অভ্যাসের ব্যাপারে তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছিল। গবেষণার শুরুতে তাদের কারোরই ক্যানসার ছিল না। পরবর্তী নয় বছর ধরে এই সাড়ে চার লাখ মানুষের তথ্য নেয়া হয়। এ সময়ের মধ্যে ১ হাজার ৭৩১ জনের ইসোফ্যাজিয়াল ক্যানসার দেখা দেয়।
ফলাফলে দেখা যায়, যারা অতিরিক্ত চা পান করেন, মদ্যপান করেন এবং ধূমপান করেন, এই তিনটি অভ্যাস যাদের নেই, তাদের তুলনায় এসব মানুষের ইসোফেজিয়াল ক্যানসারের ঝুঁকি থাকে সাত গুণ বেশি। সেই সঙ্গে তাদের গড় আয়ু ২০ বছর কমে যাওয়ার শঙ্কা রয়েছে।
বিডিবার্তা/আনর