চট্টগ্রামের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ যোগাযোগপথ ইপিজেড মোড় এখন জনদুর্ভোগের প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়েছে। ফ্লাইওভার নির্মাণকাজে দীর্ঘসূত্রতা, ড্রেনেজ ব্যবস্থার চরম অব্যবস্থা, এবং সিটি করপোরেশনের কার্যকর তদারকির অভাব – সবকিছু মিলে এলাকাটিকে বসবাস অনুপযোগী করে তুলেছে।
দেড় বছরের বেশি সময়েও শেষ হয়নি ফ্লাইওভারের কাজ।ফ্লাইওভার নির্মাণকাজ শুরু হয়েছিল চট্টগ্রাম শহরের যানজট নিরসনের লক্ষ্যে। কিন্তু কাজের গতি এতই ধীর যে আজও প্রকল্পের কোনো দৃশ্যমান অগ্রগতি নেই। নগরবাসী জানায়, দেড় বছরেরও বেশি সময় ধরে কাজ চললেও নির্ধারিত সময়সীমা কিংবা অগ্রগতি সম্পর্কে কেউ অবগত নয়। এলাকাবাসীর অভিযোগ, কাজের ধীরগতি এবং অদক্ষ ব্যবস্থাপনার কারণে প্রতিনিয়ত বাড়ছে দুর্ভোগ।
ইপিজেড মোড় দিয়ে প্রতিদিন সি ইপিজেড, কে ইপিজেড, বিমানবন্দর, নেভাল এলাকা এবং পতেঙ্গা সিবিচগামী লক্ষাধিক মানুষ চলাচল করেন। প্রতিদিন প্রায় ২০ থেকে ২৫ লাখ লোকের যাতায়াত এই পথে। অথচ রাস্তার বর্তমান অবস্থা এতই করুণ যে হেঁটে চলাও বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে। কাদাযুক্ত রাস্তা, ফেলা রাখা নির্মাণ সামগ্রী এবং ড্রেন থেকে তুলে এনে রাস্তায় ফেলা ময়লা – সব মিলিয়ে এটি যেন এক মৃত্যুফাঁদ।
ড্রেন পরিষ্কারের নামে প্রহসন?স্থানীয়দের অভিযোগ, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন ড্রেন পরিষ্কারের কাজ করলেও সেই ময়লা পাশেই রাস্তায় ফেলে রাখা হয়। পরে বৃষ্টির পানিতে সেই ময়লা আবার ড্রেনে গিয়ে পড়ে – এতে করে ড্রেনের জলাবদ্ধতা আগের চেয়েও ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে। এই চক্র থেকে মুক্তির কোনো উদ্যোগ নেই বললেই চলে।
ইপিজেড এলাকাটি গার্মেন্টস শিল্পের জন্য পরিচিত। প্রতিদিন হাজার হাজার শ্রমিক – বিশেষ করে নারী শ্রমিক – এই পথে হেঁটে গন্তব্যে যান। কিন্তু রাস্তার অবস্থা, ফুটপাতের অভাব এবং যানজটের কারণে তাঁদের কষ্টের শেষ নেই। অনেক সময় পায়ে হেঁটে কাদার মধ্যে দিয়ে যেতে হয়, যা স্বাস্থ্যঝুঁকিও তৈরি করছে।
নগরবাসীর প্রশ্ন: কবে মিলবে মুক্তি?
নগরবাসীর মধ্যে এখন চরম হতাশা বিরাজ করছে। উন্নয়নের নামে ফেলে রাখা এই অসমাপ্ত কাজ কেবল জনদুর্ভোগই বাড়িয়ে তুলছে। অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন – “সিটি করপোরেশন কেবল ফিতা কেটে ছবি তোলে, কিন্তু কাজের গুণগত মান আর সময়ানুযায়ী অগ্রগতি নিয়ে কোনো দায় নেয় না কেন?”
চট্টগ্রামবাসী এখন কার্যকর হস্তক্ষেপ কামনা করছেন। ফ্লাইওভার নির্মাণ কাজ দ্রুত সম্পন্ন করা, রাস্তা ও ড্রেনের অবস্থা উন্নত করা এবং জনসাধারণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা – এ সব কিছু এখন সময়ের দাবি। বিশেষ করে গার্মেন্টস শ্রমিকদের চলাচলের জন্য নিরাপদ ফুটপাত ও সুষ্ঠু পথচলা নিশ্চিত করা প্র য়োজন।
বিডিবার্তা/রাহাঅ