জুলাই যোদ্ধার মুখোশে চাঁদাবাজি: চিটাগাং ক্লাবে কোটি টাকার দাবিতে মব তাণ্ডব
চট্টগ্রামের অভিজাত চিটাগাং ক্লাবে অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের এক নেতার ছেলের বিয়ের অনুষ্ঠানে ঘটে গেল এক অপ্রত্যাশিত ও চাঞ্চল্যকর ঘটনা। অভিযোগ উঠেছে, অনুষ্ঠানের আয়োজকদের কাছ থেকে এক কোটি টাকা চাঁদা দাবি করা হয়েছিল, আর তা না দেওয়াতেই সশস্ত্র মব সন্ত্রাসীরা ক্লাবের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভে নামে।
শনিবার রাতে ক্লাবে এ ঘটনা ঘটে। দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা ও বোয়ালখালীর সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান জাহেদুল হকের ছেলের বিয়েতে আমন্ত্রিত অতিথিদের গাড়ি ক্লাবের ফটকে দাঁড়িয়ে তল্লাশি করে একদল লোক, যারা নিজেদের "সাধারণ শিক্ষার্থী", "বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন", এবং "এনসিপি" সদস্য বলে পরিচয় দেয়।
এই ঘটনার ফলে বিয়ের অতিথিদের মধ্যে চরম আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। আতিথেয়তার আনন্দ মুহূর্তেই রূপ নেয় আতঙ্ক আর বিভ্রান্তিতে।
ঘটনার পেছনে চাঁদাবাজির অভিযোগ তুলেছেন এইচ এম ওবায়দুর রহমান আফসার নামের এক ব্যক্তি, যিনি নিজের ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন,
> “চিটাগং ক্লাব এবং বিয়ে। একটা অথেনটিক তথ্য দেই। সারাদিন বাজেটিং চলছিল, সন্ধ্যার মধ্যেই সব টাকা পে করার কথা ছিল। কিন্তু রাত ৯ টা পর্যন্ত পর্যাপ্ত পরিমাণ না পেয়ে বিষয়টি ফাঁস করে দেয়। দাবিকৃত এমাউন্ট ছিল ১ কোটি।”
তিনি আরও উল্লেখ করেন, টাকা না পাওয়াতেই "ছাত্র জনতা"র ব্যানারে এই মব হামলার পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হয়, যার মূল উদ্দেশ্য ছিল সম্মানহানি ঘটানো এবং চাঁপ প্রয়োগ করা।
ভুক্তভোগী জাহেদুল হক চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের একজন প্রভাবশালী নেতা এবং স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা।
ঘটনাটি সামাজিক ও রাজনৈতিক মহলে চরম আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। কেউ কেউ প্রশ্ন তুলছেন—এভাবে প্রকাশ্যে একজন রাজনৈতিক নেতার ব্যক্তিগত অনুষ্ঠানে হস্তক্ষেপ এবং নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়া কি আইনের ব্যর্থতা নয়?
এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত চাঁদাবাজি বা বিক্ষোভের সাথে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
তদন্ত চলছে, তবে এ ঘটনা চট্টগ্রামের রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে এক নতুন ও অনাকাঙ্ক্ষিত মাত্রা যোগ করেছে বলেই মনে করছেন অনেকে।