নেটিজেনদের মতামত, শেখ হাসিনাকে আবার দেশে ফিরেয়ে আনা হোক ক্ষমতা বুঝিয়ে দেওয়া হোক।
ঢাকার মিটফোর্ড হাসপাতালের সামনে গত ৯ জুলাই সন্ধ্যা ৬টার দিকে ঘটে গেল এক ভয়াবহ ও মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ড। মো. সোহাগ নামের এক ভাঙারী ব্যবসায়ীকে প্রকাশ্যে পাথর ও লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করে স্থানীয় একটি চাঁদাবাজ চক্র। প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্য অনুযায়ী, যুবদল নেতা মঈনের নেতৃত্বে কিছু দুর্বৃত্ত কয়েক মাস ধরে সোহাগের কাছে মাসিক চাঁদা দাবি করছিল। সোহাগ চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তাকে হুমকি দেওয়া হয় এবং শেষ পর্যন্ত নির্মমভাবে হত্যা করা হয়।
দেশজুড়ে গত এক বছরে খুন, ডাকাতি, অপহরণ ও সহিংস ঘটনার সংখ্যা উদ্বেগজনক হারে বেড়েছে বলে জানিয়েছে একাধিক মানবাধিকার সংস্থা ও নাগরিক পর্যবেক্ষক গ্রুপ। চলমান সরকারের আমলে আইনশৃঙ্খলার এমন চিত্র দেখে অনেকে বলছেন, “আগেই ভালো ছিলো।”
বাংলাদেশ মানবাধিকার ফোরামের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৪ সালের জুলাই থেকে ২০২৫ সালের জুন পর্যন্ত এক বছরে দেশে খুনের ঘটনা ঘটেছে ১,৫৭৩টি, যা আগের বছরের তুলনায় প্রায় ১৯% বেশি। একই সময়ে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে প্রায় ৯৬০টি, যার মধ্যে অর্ধেকের বেশি হয়েছে সশস্ত্র বা সংঘবদ্ধ ডাকাতির মাধ্যমে।
অপরদিকে বিগত ৫ বছরে মোট খুনের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে প্রায় ৬,৮০০টি বলে জানিয়েছে জাতীয় অপরাধ পরিসংখ্যান ব্যুরো। বিশ্লেষকরা বলছেন, রাজনৈতিক অস্থিরতা, দুর্বল প্রশাসন ও পুলিশ বাহিনীর অভ্যন্তরীণ সংকট এর পেছনে বড় কারণ।
গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠান "ডেইলি ইনসাইট" পরিচালিত একটি অনলাইন জরিপে দেখা গেছে, দেশের ৭০% মানুষ মনে করে শেখ হাসিনার আমলে নিরাপত্তা পরিস্থিতি তুলনামূলকভাবে ভালো ছিলো। অনেকে সরাসরি বলেন, "শেখ হাসিনার আমলে অন্তত রাস্তাঘাটে রাতে চলতে ভয় পেতাম না, এখন আতঙ্ক নিয়েই বাসা থেকে বের হই।"
রাজনৈতিক বিশ্লেষক মেজর (অব.) মঈনুল হোসেন বলেন, “নাগরিক নিরাপত্তা যে কোনো সরকারের সাফল্যের প্রধান মানদণ্ড। এখন সাধারণ মানুষ নিজের ঘরেও নিরাপদ মনে করে না এটা ভয়ংকর।”
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও ‘আগেই ভালো ছিলো’ হ্যাশট্যাগে চলছে আলোচনা। অনেকে শেখ হাসিনার শাসনামলের তুলনায় বর্তমান সময়ের অবনতি তুলে ধরছেন নিজেদের অভিজ্ঞতা দিয়ে।
নাগরিকদের একটাই প্রত্যাশা নিরাপত্তা ও শান্তি ফিরিয়ে আনা হোক, রাজনীতি নয় জীবন হোক অগ্রাধিকার।
বাবার্তা/রাহাঅ