1. jobtv454@gmail.com : বাংলাদেশ বার্তা : বাংলাদেশ বার্তা
  2. info@www.bangladeshbarta.online : বাংলাদেশ বার্তা :
সোমবার, ০৯ জুন ২০২৫, ০৭:৫৬ অপরাহ্ন
শিরোনাম :

গত ১০ মাসে অপরাধে ভয়াবহ উল্লম্ফন

বিশেষ প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত: রবিবার, ২৫ মে, ২০২৫
  • ১০৭ বার পড়া হয়েছে

রাজনৈতিক পতনের পর থানা হামলা, আইন-শৃঙ্খলা ভেঙে পড়া, ডাকাতি, ছিনতাই জনগণের মধ্যে চরম নিরাপত্তাহীনতা।

 

 

গত ১০ মাসে বাংলাদেশে অপরাধের একটি ভয়াবহ ঢেউ বইছে। ২০২৪ সালের আগস্টে সরকারের পতনের পর থেকে দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি এক ভয়ংকর সংকটের দিকে যাচ্ছে। খুন, অপহরণ, ডাকাতি, ছিনতাই, গণপিটুনি সব ক্ষেত্রেই বেড়েছে অপরাধের মাত্রা। এই সংকটের পেছনে রয়েছে প্রশাসনিক অকার্যকারিতা, রাজনৈতিক শূন্যতা এবং জনগণের মধ্যে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি আস্থাহীনতা।

 

থানার উপর আক্রমণ, পুলিশ বাহিনী বিপর্যস্ত

২০২৪ সালের আগস্টে সরকারের পতনের পর মাত্র ১০ দিনের ব্যবধানে দেশের ৬৬৪টি থানার মধ্যে প্রায় ৪৫০টি থানায় একযোগে হামলা হয়। অনেক স্থানে অস্ত্র ও দলিলপত্র লুটপাট হয়। ফলে গোটা পুলিশ বাহিনী কার্যত অকার্যকর হয়ে পড়ে। অপরাধীরা বুঝে যায়, এখনই ‘অভিযান’ চালানোর সময়।

 

পরিসংখ্যানে ভয়াবহ চিত্র

 

পুলিশ সদর দপ্তর, মানবাধিকার সংস্থা ও বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যাচ্ছে,

২০২৫ সালের জানুয়ারি মাসেই খুনের ঘটনা ঘটেছে ২৯৪টি, যা আগের বছরের একই মাসের তুলনায় প্রায় ২৭% বেশি।

অপহরণ বেড়েছে দুইগুণের বেশি।

ডাকাতি ও ছিনতাই হয়েছে যথাক্রমে ১৭১ ও ২৪২টি, যা গত ছয় বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ।

 

গণপিটুনি (মব লিঞ্চিং) এ আগস্ট ২০২৪ থেকে ফেব্রুয়ারি ২০২৫ পর্যন্ত নিহত হয়েছেন ১১৯ জন, ঘটনায় জড়িত ১১৪টি মামলা রেকর্ড হয়েছে।

 

 

অপারেশন “ডেভিল হান্ট”: হাজার হাজার গ্রেপ্তার, তবুও জনমনে ভয়

 

চলমান পরিস্থিতি সামাল দিতে সরকার চালু করে “অপারেশন ডেভিল হান্ট”, যার আওতায় মার্চ ২০২৫ পর্যন্ত ১২ হাজারের বেশি ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। কিন্তু এ অভিযানে অনেক নিরীহ নাগরিকও হয়রানির শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

 

সরকার একদিকে দাবি করছে পরিস্থিতি “সন্তোষজনক”, অন্যদিকে সাধারণ মানুষ বলছে

রাত হলে আমাদের জানটাই অজানা হয়ে যায়।”

 

অপরাধ বাড়ার কারণ:

রাজনৈতিক অস্থিরতা ও প্রশাসনিক শূন্যতা বিশেষজ্ঞদের মতে, সরকারের পতনের পর প্রশাসন ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কার্যকর ভূমিকা রাখতে ব্যর্থ হয়েছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাধবিদ্যা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক এবিএম নাজমুস সাকিব বলেন

“যখন রাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাই দুর্বল হয়ে পড়ে, তখন অপরাধীরা সুযোগ নেয়। রাষ্ট্রের চোখ বন্ধ থাকলে অপরাধ বেড়েই যাবে।”

 

 

জনগণের ভয় ও ক্ষোভ:

‘নিরাপত্তা নেই, বিচার নেই’

একজন পথচারী বলেন,

“আগে রাতে দোকান বন্ধ করে বাড়ি যেতাম, এখন সন্ধ্যার পরই তালা মেরে বসে থাকি।”

একজন গৃহবধূর কণ্ঠে আতঙ্ক:

“স্বামী বাইরে গেলে ঘুমাতে পারি না। কবে কি হয় কে জানে।”

 

আইন-শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার জন্য করণীয়

 

বিশ্লেষকরা বলছেন, শুধুমাত্র গ্রেপ্তার নয়, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও প্রশাসনিক কাঠামো পুনর্গঠন ছাড়া দীর্ঘমেয়াদি নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব নয়।

 

সরকারকে এখনই নিচের দিকে নজর দিতে হবে:

থানা ও পুলিশ প্রশাসন পুনর্গঠন,জবাবদিহিমূলক বিচারব্যবস্থা চালু,রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত,জনগণের অংশগ্রহণে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা কমিটি গঠন।

 

সময় শেষ হয়ে আসছে

বাংলাদেশ আজ এক ভয়াবহ নিরাপত্তাজনিত সংকটে। ১০ মাস ধরে চলা অপরাধের স্রোত যদি এখনই থামানো না যায়, তাহলে সামনে আরও বড় দুর্যোগ অপেক্ষা করছে। রাজনৈতিক নেতৃত্ব, প্রশাসন এবং জনগণ সবাইকে একসঙ্গে এগিয়ে না এলে বাংলাদেশের সামাজিক স্থিতি আর দীর্ঘস্থায়ী হবে না।

 

বিডিবার্তা/রাহাঅ

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন

পুরাতন সংবাদ পড়ুন

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১
১২১৩১৪১৫১৬১৭১৮
১৯২০২১২২২৩২৪২৫
২৬২৭২৮২৯৩০৩১  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত, আমাদের প্রকাশিত সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার অপরাধ।
ওয়েবসাইট ডিজাইন: ইয়োলো হোস্ট